শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
পারভেজ রানা, স্টাফ রিপোর্টার:
বরগুনার তালতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১৯টি দোকান ও ৪টি বসতঘর সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। আগুন নিভাতে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫ টি দোকান। অগ্নিকান্ডে দোকান মালিক ও ভাড়াটিয়া সহ ৪৩ প্রতিষ্ঠানের ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এলকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্হদের দাবী ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের গাফিলতি কারণে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ কম হতো। এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো জানা না গেলেও ব্যবসায়ীদের দাবি এটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড।
রোববার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কড়াইবাড়িয়া বাজারে এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সংবাদ শুনে রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা, বাংলাদেশ নৌবাহিনী তালতলী কন্টিনজেন্ট কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ, সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে কড়াইবাড়িয়া বাজারের মো.বশির এর পেট্রোলের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশের দোকান ও সহ বসত ঘরে। পরে স্থানীয়রা তালতলী ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। তালতলী ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভাতে গেলে গাড়িতে পানি না থাকায় তারা আগুন নিভাতে ব্যর্থ হয়।
পরে পাশের ডোবা থেকে মেশিনের মাধ্যমে পানি দেয়ার চেষ্টা করলে মেশিনে ফুয়েল না থাকায় তাও ব্যর্থ হয়। পরে খবর দেয়া হয় আমতলী ফায়ার সার্ভিসকে। খবর পেয়ে আমতলী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে পুড়ে যায় মুদি-মনিহারি, হার্ডওয়্যার, ফার্মেসি ও তেলের দোকানসহ ১৯টি দোকান এবং ৪টি বসতঘর। পুড়ে ছাই হয়ে যায়, এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরো ৫টি দোকান। দোকানের ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী সহ মোট ৪৩জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তালতলী ফায়ার সার্ভিসের অপেশাদার কর্মকাণ্ডের কারণে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা যখন এসেছে তখন দুটি ঘর অগ্নিকাণ্ড শিকার হয়েছেন। পরে আমতলী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাদের ধারণা ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য এটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড।
ক্ষতিগ্রস্ত ইব্রাহিম বীপরাজ বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের গাফেলতির কারণে এমন অবস্থা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা যদি নিজেরা সবসময় প্রস্তুত না থাকেন, তাহলে কি করে চলবে। এই দায় ফায়ার সার্ভিসের নিতে হবে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহীম সিকদার পনু বলেন, ‘কড়াইবাড়িয়া বাজারে এর আগে কখনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৪ থেকে ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা পথে বসে গেছেন। তালতলী ফায়ার সার্ভিস যখন ঘটনাস্থলে আসার পরপরই তারা যদি আগুন নিভানোর কাজ শুরু করতে পারতেো তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হতো।
এ বিষয়ে তালতলী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার এস এম নুরুজ্জামান ব্যবসায়ীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয়রা প্রথমে কচুরিপানা ভর্তি পুকুরে নামিয়ে দিয়েছিল, যার কারণে কচুরিপানা পাইপের ভিতরে আটকে গিয়ে পানি চলাচল বন্ধ হয়। আর আমাদের পর্যাপ্ত তৈল ছিল তৈল না থাকার প্রশ্নই আসে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, খবর পাওয়ার পর আমি ভোররাত পর্যন্ত ঘটনাস্থল ছিলাম । ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তালতলী উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।